নেড়াপোড়ার প্রাক্কালে
আজ
কেন জানিনা একদাম কাজ করতে ইচ্ছে করছে না। অফিসে এলেও মন বারবার ফিরে যাচ্ছে
শৈশবে। কাল দোল, মানে আজ নেড়াপোড়া। এই সময়ে শৈশবে প্রায় এক সপ্তাহ আগে থাকতে
আমাদের তৎপরতা থাকতো তুঙ্গে। বাড়ীর কাছের কলাবাগান গুলো থেকে শুকনো পাতা মানে
বাসনা কেটে এনে বাড়ীর পাশে জড় করা, বেশ শক্তপোক্ত দেখে দুটো বাঁশ যোগার করা কি চাদ্দিখানি
ব্যাপার? এছাড়া শুকনো আম পাতা, কাঁঠালপাতা, দড়ি, মাটির হাঁড়ি আরও কত কি? এই
একসপ্তাহ খেলা ভুলে জিনিসপত্র জোগাড়ে মন থাকতো আমাদের।আর দুপুরবেলা থেকেই শুরু করে
দিতাম নেড়াপোড়ার প্রস্তুতি। বাঁশ দুটো আড়াআড়ি ভাবে বেঁধে তাতে শুকনো কলাপাতা
(বাসনা) বেঁধে মোটামুটি চেষ্টা চলত একটা মানুষের অবয়ব দেওয়ার। যেটাকে আমরা বুড়ী
বলতাম, আর এই জন্নে গ্রাম বাংলায় আজও নেড়াপোড়া কে বুড়ী পোড়ানো বা চাঁচর বলে ডাকা
হয়। আমরা ৮-৯জন কচিকাঁচা মিলে সব করতাম, কি অনাবিল আনন্দ খুঁজে পেতাম এই সব গ্রাম্য
খেলায়। মাঝে মাঝে নিজেরা চাঁদা দিয়ে বেশ কিছুটা খড় কিনতাম, যেটা ওই কলাপাতার উপর
দিয়ে বেঁধে দিতাম, ব্যাস আর কি নেড়া তখন আরও সুন্দরী (নেড়া বা বুড়ী পোড়ানো মানে
বুড়ী স্ত্রীলিঙ্গ তখন নেড়া কে সুন্দরী বলতে আপত্তি কোথায়?)। আমাদের দলের মধ্যে
শান্তনু ছিল শিল্পী, সেই চক দিয়ে মাটির হাঁড়ির উপরে সুন্দর করে বুড়ীর চোখ, নাক
আঁকত। আমার আজও মনে পরে আমার বাবা আমাদের এই নেড়াপোড়ায় খুব সাহায্য করতেন, শাবল
দিয়ে মাটি খুঁড়ে বাঁশ পুতে তাতে নেড়া বা বুড়ী বানানোয় বাবার অবদান ছিল অবর্ণনীয়। কালীপূজোর
শেষে কয়েকটা চকলেট বোম আলাদা করে রেখে দিতাম এই নেড়াপোড়ার জন্নে, চকলেট বোমের
আওয়াজ ছাড়া নেড়াপোড়া জমে কি? আমি মায়ের কাছে গিয়ে আগে থাকতেই আবদার করে রাখতাম –
মা মা বেশ কয়েকটা বড় বড় আলু আর টমাটো দিতে হবে কিন্তু। মা হেসে বলত – আরে পাগল
কোনদিন না দিয়েছি তোকে? নেড়া বা বুড়ী তৈরি হয়ে গেলে ওর ভিতরে বড় মাটির ভাঁড়ে করে ওই আলু আর টমাটো দিতাম।
নেড়াপোড়ার শেষে ওই পড়া আলু আর টমাটো একটু আঁচারের তেল আর কাঁচা লঙ্কা দিয়ে খাবার
মজাই আলাদা।
নেড়া
বা বুড়ী বানানোর পর সেটাকে আমরা দল বেঁধে পাহারা দিতাম, নইলে অন্য পাড়ার ছেলেরা
এসে আগুন দিয়ে দেওয়ার ভঁয় থাকত। তারপর সন্ধ্যাবেলায় সুরজিমামা অস্ত গেলে আমরা তৈরি
হতাম নেড়াপোড়ার জন্নে, আগে আমরা আসে পাশের বাড়ীর কাকু, কাকিমা, ছোট ছোট ভাই-
বোনেদের ডাকতাম, সবাই মিলে একসাথে মজা না করলে আনন্দ যে ডবল হতো না। আর তখন আমাদের
সমাজও এতো জটিল হয়ে ওঠেনি, সবাই একসাথে আনন্দ ভাগ করে নিতে জানতাম। সব কাকু,
কাকিমা, দাদা দিদি সবাই মিলে মাঠে শতরঞ্জি পেতে বসে জমিয়ে আড্ডা দিতে দিতে
নেড়াপোড়ানো হতো। একটা বাঁশের কঞ্চির মাথায় একটু নেকরা কাপড় বেঁধে, সেটা কে কেরোসিন
তেলে ডুবিয়ে আগুন দিয়ে দেওয়া হতো নেড়ার গায়ে। নেড়ার সেই পলাশ শিমুল আগুনের রঙ
রাঙ্গিয়ে দিত আকাশ। আকাশের দিকে উঠে যাওয়া সেই উদ্দাম আগুনের নৃত্যে আমরাও নেচে
উঠতাম হাততালি দিয়ে আর সবাই মিলে চেঁচিয়ে বলতাম - “আজ আমাদের নেড়াপোড়া কাল আমাদের
দোল। পূর্ণিমাতে চাঁদ উঠেছে বোলো হরি বোল।“ চকলেট বোমের আওয়াজে আর আমাদের হই
হুল্লোড়ে চারিদিক গমগম করতো। যতক্ষণ নেড়া জ্বলত আমরা আমাদের হই হুল্লর চালিয়ে
যেতাম আর মা, কাকিমারা বসে গল্প জুড়ত, সাথে বাবা, কাকারাও বসে যেত।
নেড়া
যখন নিভে আসত মা, কাকিমারা ওই নেড়ার আগুনে মঠ, ফুটকড়াই ছুড়ে দিয়ে নমস্কার করতো আর
আমাদেরও বলত নমস্কার করতে, তারপর পিতলের থালায় সাজানো মঠ, ফুটকড়াই দিত আমাদের।অনেক
সময় আবার আলুর চপ, শিঙ্গাড়া পেতাম উপরি পাওনা হিসাবে। এরপর নিভন্ত নেড়ার (বুড়ীর)
ভিতর থেকে মাটির ভাঁড় খুঁজে বের করতাম আমরা, অনেকসময়ই টমাটো পেতাম না, পেতাম কালো,
পুরে যাওয়া আলুগুলো, আলুগুলো একটু জলে ধুয়ে নিয়ে আঁচারের তেল, কাঁচা লঙ্কা মেখে
চলত আমাদের চড়ুইভাতি।
তারপরও
বেশ কিছুক্ষণ আড্ডা মেরে বাড়ী ফিরতাম সবাই। আর তার মধ্যেই প্ল্যান হয়ে যেত এবারে
কাকে বেশি রঙ মাখান হবে, কে কি রঙ, আবীর কিনেছি বা কার কটা পিচকারী, বেলুন হয়েছে।
হোলি হায় ভাই হোলি হায়, বুরা না মানো আজ হোলি হায়
সকাল
হতে না হতেই আমরা জুতে যেতাম রঙ বানানো, বেলুন বানানোর কাজে। মা কে বিরক্ত করে
মারতাম বালতি দাও বালতি দাও বলে। ২-৩ খানা বালতি নিয়ে রঙ গোলা হতো, আর এই কাজে
বরাবরের মতো সাহায্য করতো আমার বাবা। কোন বালতি তে গোলাপি রঙ, আবার কোনটায় ঘন সবুজ
রঙ বা লাল রঙ। এরপর পিচকারী দিয়ে বেলুন গুলোই রঙ ভরে জল ভর্তি বালতি তে ডুবিয়ে
রাখতে হতো, নইলে ফেটে যাওয়ার সম্ভবনা থাকত। রঙ ঠিকঠাক হয়েছে কিনা দেখার জন্নে
বাড়ীর পাশের কলাগাছ আর পোষা ভুলো কুকুর তো ছিলই। ভুলো টা ছিল আমার খুব নেওটা,
সারাদিন আমার সাথেই ঘুরে বেড়াতো। খালি রঙ দিলে কুই কুই করে এসে পায়ে লুটিয়ে পড়ত,
যেন বলত – রঙ দিয়না দাদা, রঙ যে আমার সয়না। আমাদের বাড়িতে এছাড়াও দুইখানি জার্মান
স্পিজ কুকুর ছিল – লুসি আর সিমি। ওদের আমি আবীর এর টিপ পরিয়ে দিতাম।আর বলতাম – তোরা
চুপ করে বস, আমি রঙ খেলে এসে তদের নিয়ে খেলব। কি বুজত কে জানে খালি ভুকভুক করে বকত
আর প্যান্ট ধরে টানাটানি করতো, কিছুতেই যেতে দেবে না, ওদের সাথেই খেলতে হবে আমায়।
অনেক কষ্টে অন্য ঘরে আটকে তবে যেতে পারতাম। আমরা রঙ খেলার আগে বাড়ীর বড়দের পায়ে
আবীর দিয়ে প্রণাম করতাম, সাথে পাওনা ছিল হলুদ, গোলাপি, সাদা রঙের চিনির মঠ আর
ফুটকড়াই। মা, বাবা মাথায় আবীরের টিপ দিয়ে বলত বেশি দূরে কোথাও যাবেনা, আর বেশি রঙ
খেলা নয় ঠিক আছে? ঘাড় কাত করে হ্যাঁ বলে একছুটে রাস্তায় সাথে ভুলো কুকুর, যেখানে
আমার বন্ধুরা অপেক্ষা করছে আমার জন্নে। তারপর তো শুদু হোলি হাঁয়, একে অপর কে
রাঙিয়ে দেওয়ার পালা আজ। আর মুঠো মুঠো আবীর আকাশের দিকে ছুড়ে দিয়ে মোহিত হয়ে দেখা –
আর চেনা মেয়ের মুখে আবীরের ছটা, লাজুক মুখে রঙ মাখানো সব কেমন ভালোলাগায় মেশানো।
আজ চারিদিকে শুদু অদ্ভুত এক ভালোলাগা। কিভাবে যেন কেটে যেত সময়, মার ডাকে ফিরে
যেতাম বাড়ীর পানে। আর গেলেই মা বলে উঠত – উফফ কি ছিরি করেছিস মুখটার? চল গরম জল
করে সাবান মেখে স্নান করবি চল। আর যদি জ্বর বাঁধাস তো দেখবি ... ...। বাড়ী ফিরতেই
পোষা লুসি, সিমি ঝাঁপিয়ে পড়ত, আর আমার রঙ মাখা মুখ দেখে ভুকভুক করে সমানে বকে যেত,
যতক্ষণ না স্নান ছেড়ে একটু ধাতস্ত হতাম। বেলার দিকে পাড়ার সব বড় কাকু, কাকিমা রা
আসত বাড়িতে, বড় দের দোল টা ছিল একটু অন্নরকম, শুদু আবীর দেওয়া আর ছেলেদের কোলাকুলি
আর মেয়েদের লাল আবীরের টিপ দেওয়া। সাথে অবশ্য মিষ্টিমুখ তো ছিলই। আমিও প্রত্যেকবার
ভাগ পেতাম মিষ্টির, মঠ, ফুটকড়াইয়ের, খেলা শেষে অনেক সময় দুপুরে সবাই একসাথে বসে
খাওয়া দাওয়া হতো। সেটা আবার উপরি পাওনা।
এখন
দোলের সময় অফিস ছুটি থাকে বারান্দায় দাঁড়িয়ে পাড়ার কচিকাঁচা আর বড়দের রঙ খেলা,
দেদার মাইকের আওয়াজ আর অফুরন্ত হই হুল্লোড় দেখি। সঙ্গে মদের থুড়ি জলের নেশায় চটুল
হিন্দি গানের সাথে কোমর দোলানো বা অভব্যতাও চোখে পড়ে, এখন আর নিজেকে রাঙিয়ে নেওয়ার
চাহিদা অনুভব করি না। উল্টে বিষণ্ণতায় ভরে যায় মন, কেন জানিনা খুব মিস করি সেই
ছোটবেলাটাকে। আর অনেক তফাত খুঁজে পাই সেদিনকার সেই দোল খেলা আর আজকের দোল খেলার
মধ্যে।
তবু
আমি মনে করি প্রত্যেকটি মানুষের একবার অন্তত জীবনে রঙ খেলা উচিত। একমাত্র বসন্তের
রঙই পারে বিবর্ণ, মলিন জীবন কে রাঙিয়ে তুলতে। নইলে হয়তো সেই স্বার্থপর দৈত্য তার
মতো আফসোস করতে হবে - "How
selfish I have been, now I know why the spring would not come here"। তাই প্রত্যেকটি মানুষের মনের বাগানে বসন্ত জাগ্রত হোক, আকাশে বাতাসে
আবীরের গন্ধ ভেসে বেড়াক, গাছভরা পলাশ ফুল ঝরে পরুক রাস্তায়, আগুন লাগুক মানুষের
মনে ও প্রানে।
হোলি বা দোল নিয়ে কয়েকটি কথা
হোলি বা দোল নিয়ে কয়েকটি কথা না বলে
পারছি না, অনেকেই হয়তো জানেন তাও আর ও একবার বলতে মন চাইল। দৈত্যরাজ হিরণ্যকিশপুর কাহিনি আমরা সকলে জানি।
ভক্ত প্রহ্লাদ অসুর বংশে জন্ম নিয়েও পরম ধার্মিক ছিলেন। হিরণ্যকিশপু এটা কোন ভাবেই মানতে পারেন নি, তাই
তিনি নির্দেশ দেন প্রহ্লাদকে হত্যা করার। তাঁকে যখন বিভিন্নভাবে চেষ্টা করেও হত্যা করা
যাচ্ছিল না তখন হিরণ্যকিশপুর বোন হোলিকা প্রহ্লাদকে কোলে নিয়ে আগুনে প্রবেশের সিদ্ধান্ত নেন। কারণ হোলিকা এই বর পেয়েছিল যে
আগুনে তার কোন ক্ষতি হবে না। কিন্তু অন্যায় কাজে শক্তি প্রয়োগ করায় হোলিকা
প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনে প্রবেশ করলে বিষ্ণুর কৃপায় প্রহ্লাদ অগ্নিকুণ্ড থেকেও
অক্ষত থেকে যায় আর ক্ষমতার অপব্যবহারে হোলিকার বর নষ্ট হয়ে যায় এবং হোলিকা পুড়ে
নিঃশেষ হয়ে যায়, এই থেকেই হোলি কথাটির
উৎপত্তি ।
এছাড়া বৈষ্ণব মতে, ফাল্গুনী বা দোলপূর্ণিমার
দিন বৃন্দাবনে শ্রীকৃষ্ণ আবীর ও গুলাল সহযোগে শ্রী রাধিকা ও অন্যান্য গোপীগণের
সাথে রঙ খেলায় মেতে উঠেছিলেন, অনেকের মতে সেই থেকেও দোল খেলার উৎপত্তি। এখনও
নবদ্বীপ বা অন্যান্য বৈষ্ণব প্রধান এলাকায় দোল যাত্রার দিন রাধা ও কৃষ্ণের বিগ্রহ
কে আবীর ও গুলালে স্নান করিয়ে দোলা বা পালকি তে চরিয়ে কীর্তন গান সহযোগে
শোভাযাত্রা বের করা হয়। আর ভক্তরা নিজেদের মধ্যে রঙ খেলেন।
অন্যদিক বসন্তের পূর্ণিমার এই দিনে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ কেশি
নামক অসুরকে বধ করেন। কোথাও কোথাও অরিষ্টাসুর নামক অসুর বধের কথাও আছে। অন্যায়কারী, অত্যাচারী এই অসুরকে বধ করার পর সকলে রঙ নিয়ে আনন্দ করে। অঞ্চল ভেদে হোলি বা দোল উদযাপনের ভিন্ন
ব্যাখ্যা কিংবা এর সঙ্গে সংপৃক্ত লোককথার ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু উদযাপনের রীতি
এক ।বাংলায় আমরা বলি ‘দোলযাত্রা’ আর পশ্চিম ও মধ্যভারতে ‘হোলি’,। রঙ উৎসবের আগের দিন ‘হোলিকা দহন’ হয় অত্যন্ত ধুমধাম করে । শুকনো গাছের ডাল, কাঠ
ইত্যাদি দাহ্যবস্তু অনেক আগে থেকে সংগ্রহ করে সুউচ্চ একটি পুতুল বানিয়ে তাতে অগ্নি সংযোগ করে ‘হোলিকা দহন’ হয়
। পরের দিন রঙ খেলা । বাংলাতেও দোলের আগের দিন এইরকম হয় যদিও তার ব্যাপকতা কম –
আমরা বলি ‘চাঁচর’ বা নেড়াপোড়া । এই নেড়াপোড়া বা চাঁচর
কে নিয়েও পুরাণে একটি গল্প পাওয়া যায়। বলা হয় এই দিনে শ্রী কৃষ্ণ মেড়া তথা মেসাসুর কে বধ করার পরে যে
আনন্দ উৎসব হয়েছিলো পরবর্তীকালে মেড়া পোড়ানো অপভ্রংশে হয়ে যায় নেড়া পোড়ানো।
সামাজিক দিক থেকে হয়তো অন্যরকম ব্যাখ্যা আছে, দোল আমাদের ঋতুচক্রের শেষ উৎসব । পাতাঝরার সময়, বৈশাখের প্রতীক্ষা। এই সময় পড়ে থাকা
গাছের শুকনো পাতা, তার ডালপালা একত্রিত করে জ্বালিয়ে
দেওয়ার মধ্যে এক সামাজিক তাৎপর্য রয়েছে । পুরনো জঞ্জাল, রুক্ষতা,
শুষ্কতা সরিয়ে নতুনের আহ্বান হচ্ছে এই হোলি। বাংলায় দোলের আগের
দিন ‘চাঁচর’ বা নেড়াপোড়া কে এভাবেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে।
এই দোল বা হোলি আমাদের হিন্দু সভ্যতার
অন্যতম প্রাচীন উৎসব। আমাদের বেদ ও পুরানেও এর উল্লেখ আছে, ৩০০ খ্রিস্টপুরবাব্দের
একটি শিলালিপি তে রাজা হর্ষবর্ধনের দোল খেলার বিবরণ আছে এছাড়া রাজা হর্ষবর্ধনের সময়ে একটি
নাটিকাতেও রঙ খেলার উল্লেখ আছে। মধ্যপ্রদেশের রামগড়ে যে গুহালিপি দেখতে পাওয়া যাই
তাতেও দোল উৎসবের কথা পাওয়া যায়। আর বাৎস্যায়ন রচিত কামসুত্রেও দোল খেলার কথা
বর্ণিত আছে।
আমরা অনেকে হয়তো জানি না দোলপূর্ণিমার এই পুণ্যলগ্নে নবদ্বীপের গঙ্গাপাড়ে জন্মেছিলেন
শ্রীচৈতন্যদেব, তাই এই ফাল্গুনী পূর্ণিমার দোলের দিনটিকে ‘গৌরপূর্ণিমা’ও বলা হয়। দোল বা নেড়াপোড়া বা চাঁচর নিয়ে
পুরাণে বা আমাদের সাহিত্যে, ইতিহাসে যাই থাকুক না কেন, পুরাকাল থেকেই এটি ভারতের
অন্যতম প্রাচীন প্রাণোচ্ছল উৎসব। নতুন করে জেগে ওঠার, নতুন আনন্দে,
নতুন আশায় নিজেকে রঙিন হয়ে ওঠার এই উৎসবের প্রাক্কালে সবাই ভালো থাকুন আর ভালো
রাখুন।
No comments:
Post a Comment