Tuesday 31 January 2017

ছোটবেলার সরস্বতী পূজা, একটু ফিরে দেখা।


ছোটবেলার সরস্বতী পূজা, একটু ফিরে দেখা।

মানুষ মনে হয় সব পারে শুধু পারে না ভুলতে। আচ্ছা ধরুন বৃষ্টির ফোঁটা কে যদি ভুলে থাকতে গিয়ে জানালা বন্ধ করি কিংবা ছাতা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখার চেষ্টা করি তাতে কি ভোলা সম্ভব? টুপ করে হঠাৎ ঝরে পরা বৃষ্টির একটি ফোঁটার স্পর্শই যথেষ্ট। আসলে পেন্সিলের দাগ মোছার জন্যে ইরেজার আছে, পেনের দাগ মোছার জন্যে করেকশন ফ্লুইড আছে, চকের দাগ মোছার জন্যে ডাস্টার। হয়তো চোখের জল মোছার জন্যে সমব্যথী কারো হাত, কারো কাঁধ আছে কিন্তু স্মৃতি মোছার জন্য? না মনে হয় কিচ্ছু নেই।

ছোটবেলা কে কবে দূরে ফেলে চলে এসেছি, কতকিছুই তো ভুলে গেছি, কিন্তু সরস্বতী পূজার কথা মনে হয় ভুলতে পারবো না। আমরা সেবার ক্লাস ইলেভেন, আমাদের ‘এ’ সেকশনই দায়িত্ব পেল পূজার সব আয়োজন করার। ব্যাস কি ব্যাস্ততা আমাদের মধ্যে, সবাই মিলে দায়িত্ব ভাগ করে নিয়ে লেগে পরলাম কাজে। কেউ কাগজ কেটে শিকলি বানাচ্ছে, তো কেউ কুমোরপাড়ায় গিয়ে মূর্তির কতদূর দেখে আসছে। আবার কেউ স্কুল ঘরের একটা দিক পরিস্কার পরিছন্ন করে সাজিয়ে তুলছে অদ্ভুত নিপুণতায়, আঁকা হচ্ছে নক্সা করা আলপনা। এই কাজে আমাদের শিল্পী বন্ধু সুখেন ছিল অগ্রগন্য। আবার কেউ কেউ স্কিম করছে কিভাবে মেয়েদের স্কুলে নিমন্ত্রণ করার দলে ভিড়ে যাওয়া যায়। যাই হোক গুতিকয়েক স্মার্ট ছেলে মেয়েদের স্কুলে নিমন্ত্রণ করার গুরু দায়িত্বটি সেরে ফেললো বাদবাকি ছেলেদের শ্যেনদৃষ্টি এড়িয়ে, পড়ে অবশ্য এই নিয়ে ঝগড়াঝাঁটি হয়েছিলো আবার মিটেও গেছিলো। আসলে আমাদের সময়টাই ছিল ওইরকম, আমরা অভিমান করতাম বেশি, রাগ করতাম কম, তাও আবার বেশি দিন পুষে রাখতে পারতাম না। যাক সে কথা পুজোর কোথায় ফিরে আসি, পুজোর আগের দিন বিকাল বেলায় ভ্যানে করে ঠাকুর এনে সাজানো হয়ে গেলো। আমাদের মধ্যে ইঁচড়ে পাকা কয়েকজন ছিল তাঁরা বলাবলি করছিলো – যাই বলিস এবারে কিন্তু সরস্বতী ঠাকুর টা দেখে মনে হচ্ছে না ঠাকুর ঠাকুর, ঠিক যেন পাশের বাড়ীর মেয়েটি। কেউ কেউ গভীর প্রেমে চকাস চকাস করে দু চারটে চুমুও খেয়ে ফেললো। কি আর করা যাবে, সত্যিই সরস্বতী মূর্তির দিকে তাকালেই মনে হয়, এই তো সেই কিশোর বয়সের প্রেমিকা, ফুরফুরে ঠোট, চোখে দুষ্টু হাসি। এখনই বুঝি দুষ্টু চোখের ইশারা দিয়ে বেণী ঝুলিয়ে হেটে চলে গেলো বুঝি। এখানেই এই কৈশোরের দেবীর জয় জয়কার, কোন বাঙালি কিশোর/ তরুন কি ভুলতে পারে সেই অমোঘ শব্দ বন্ধ - ‘কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে’। না এখানে পীনোন্নত বক্ষজুগলের কথা কেউ বলেনি, শুদু রয়েছে কিশোরী কন্যার উদ্ভিন্ন যৌবনের আভাসটুকু। সরস্বতী পুজোয় কিশোর প্রেমের অভিজ্ঞতা যার নেই, তার জীবন যে ব্যর্থ সেটা এখন বুঝতে পারি। যা বললাম তা আত্মউপলব্ধি বলতে পারেন বা স্বীকারোক্তি হিসাবেও ভাবতে পারেন, এটা পাঠকের উপরই ছেড়ে দিলাম। তবে এটা হলপ করে বলতে পারি - সিগারেট ধরানো, প্রথম প্রেম বা বাঙালি কিশোর কিশোরীর অবদমিত ‘লিবিডো’ মুক্তির স্বাদ পেয়েছে এই বিশেষ দিনটাতেই। তাহলে সরস্বতী পুজো কি শুধু মাত্র বই আর পেন, ভক্তি-গদগদ নৈবেদ্য? তা হলে হয়তো আমার মতন অনেকেরই আক্ষেপ থেকে যেতে বাধ্য। 

শেষে এলো বহু কাঙ্ক্ষিত পুজোর দিন। পুজোর দিন সকাল সকাল উঠে স্নান ছেড়ে নিয়ে দৌড় দিলাম স্কুলের দিকে, না না স্কুলে থাকব বলে নয়, স্কুলে একটু সময় কাটিয়ে, প্রসাদ খেয়ে সোজা স্ট্যান্ডের ধারে আড্ডা দেবার জন্যে। স্কুলে গিয়ে দেখি আমাদের সংস্কৃত স্যার পূজায় বসেছে, সেবারে পূজারি ঠাকুর না পাওয়ায় উনি প্রক্সি দিয়ে দিয়েছিলেন। তবে চমৎকার মন্ত্রপাঠ করতেন, মনের গভীরে ছুঁয়ে যেত। অঞ্জলি দেওয়ার সময়ে হাসবো না হাসবো না করেও সেই ফিক করে হেঁসে ফেলাম, কারণ সেই - “ওঁ জয় জয় দেবী চরাচর সারে, কুচযুগশোভিত মুক্তাহারে। বীনারঞ্জিত পুস্তক হস্তে, ভগবতী ভারতী দেবী নমহস্তুতে“। তবে দেখলাম এবারে স্যার ভুরু কুঁচকে না দেখে উনিও হেঁসে ছেড়ে দিলেন। না প্রসাদ তো খাওয়া হয়ে গেলো, কিন্তু বন্ধুদের দেখা নেই, সব শালা গেলো কোথায়? তখন তো এত মোবাইলের চল ছিল না, তাই এদিক সেদিক কিছুটা সময় কাটিয়ে একা একাই চলে গেলাম স্ট্যান্ডের ধারে। তখন কি ছাই জানতাম আমার জন্যে কি চমক অপেক্ষা করে আছে?

স্ট্যান্ডের ধারে গিয়েও কাউকে খুঁজে না পেয়ে নীচে সিঁড়িতে গিয়ে বসলাম। তখন অবশ্য বেশ সিগারেট খেতে শিখেছি, এদিক সেদিক তাকিয়ে একটা সিগারেট ধরিয়ে আয়েশ করে বসে বসে ভাবতে লাগলাম শালা সব বন্ধু গুলো গেলো কোথায়? নিশ্চয়ই কোনও মেয়ের পিছনে ফিল্ডিং দিচ্ছে, শালা ঠিক জুটিয়ে নিয়ে মৌজ করবে আর আমি এবারেও আঙুল চুষবো। হে মা সরস্বতী আমি তো তোমায় চুমুতুমু খাইনি, তবে কেন আমার উপর এই অবিচার? এবারে স্বপ্নে দেখা সেই রাজকন্যার মতো একপিস জুটিয়ে দাওনা মা, কথা দিচ্ছি মন দিয়ে পড়াশুনা করব, আর এদিকে সেদিকে কোনও নজর দেবো না। কে জানে সেবারে মা মনেহয় ভালো মুডে ছিল, শুনে ফেলেছিল আমার কাতর প্রার্থনা। হঠাৎ সম্বিত ফিরল মেয়েলী কণ্ঠে হাহা হিহি শুনে, পিছনে ফিরে দেখি পাঁচ-ছয়জন মেয়ে নিজেদের মধ্যে খুব হাঁসি ঠাট্টা করছে আর মাঝে মাঝেই একজন কে ধাক্কা দিচ্ছে আমাকে দেখিয়ে। ও হরি ভালো করে তাকিয়ে দেখি সুপর্ণা (আমাদের একজন বন্ধুর বোন, মাঝে মাঝে ওদের বাড়ী যাওয়ার সুবাদে মুখ চেনা আছে) শ্যামলা গায়ের রঙ, খুব একটা আহামরি দেখতে নয় তবে রুপে একটা স্নিগ্ধ মাধুর্য আছে। এমনিতে খুব চুপচাপ, কম কথা বলে আজ দেখছি বন্ধু সঙ্গে বেশ বকবক করছে। আমি দেখছি দেখে ওরা বেশ চুপ করে গেলো, তারপর দেখি ওদের মধ্যে একটা সর্দারনী টাইপের মেয়ে খুব করে সুপর্ণাকে কি সব বোঝাচ্ছে, আর সুপর্ণা মাথা নেড়ে না না বলে যাচ্ছে। তারপর জোর করে ওই মেয়েটা সুপর্ণার হাত ধরে টানতে টানতে আমার সামনে এসে হাজির, আমি তো বেশ ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গেছিলাম, মুখচোরা বলে এমনি ভালোভাবে কথা বলতে পারতাম না, আর এত দেখছি পুরো মহিলা ব্রিগেড। ওই মেয়েটা এবারে বলে উঠলো – নে বাবা আমি সামনে এনে দাড় করিয়ে দিয়েছি, এবারে যা বলবার তুই বলে নে। আর শুনুন আমার এই বন্ধুটি আপনাকে কিছু বলতে চায়, একটু শুনবেন প্লীজ? আমি তো ঘাবড়ে গিয়েছিলাম, তাও কোনও মতে বললাম – তুমি সুপর্ণা না? দিবাকরের বোন তো? এখানে কি ব্যাপার? সুপর্ণা চুপ করে মাটির দিকে তাকিয়ে দাঁড়িয়ে ছিল, পরনে নীল শাড়িতে বেশ মানিয়েছিল ওকে। ও আস্তে আস্তে বলল – একটা কথা বলব বাবাই দা? রাগ করবে না তো? আমি বললাম – না বল না কি বলতে চাও? সুপর্ণা মুখ তুলে বলল – তুমি কাউকে ভালোবাস বাবাইদা? আমি অবাক হয়ে গেলাম, হঠাৎ এরকম কথা কেন জিজ্ঞেস করছে ও। বললাম – হঠাৎ এই প্রশ্ন? সুপর্ণা বলল – বোলো না প্লীজ আমার জানা দরকার। 

আমি বললাম – না এখনও কাউকে ভালোবেসে উঠতে পারি নি, কিন্তু তুমি....। সুপর্ণা হাঁসি মুখে বলল – একটা কথা বলছি প্লীজ তুমি কিছু মনে করো না, যদি খারাপ লাগে ভুলে যেও, কিন্তু দাদাকে বোলো না। আমার তোমাকে খুব ভালো লাগে, হয়তো ভালোবাসিও। তুমি আমায় একসেপ্ট করবে? আমি একদম অবাক হয়ে গেছিলাম, মাথায় কিছুতেই ঢুকছিল না যে মেয়েটা বাড়িতে গেলে বেশি কথা বলতো না, খালি দাদাকে ডেকে দিয়েই পালিয়ে যেত সে আমার সামনে আজ এই কথা বলছে? আমি শুদু বললাম – দেখো আমি তোমায় কোনদিনও এইভাবে দেখিনি, আর হঠাৎ করে কি এইভাবে কাউকে ভালোবাসা যায়? সুপর্ণার হাঁসিমুখটা কেমন কালো হয়ে গেলো, ও মুখ নামিয়ে বলল – আই অ্যাম সরি বাবাইদা। আমি তোমাকে আর ডিস্টার্ব করব না। আচ্ছা এরপরে তুমি আমাদের বাড়ী আসবে তো? আর দাদা কে কিছু বোলো না প্লীজ।  আমি বললাম – বলবনা, তুমি নিশ্চিন্ত থাকতে পার। সুপর্ণারা এর পর ওইখান থেকে চলে গেলো, যাওয়ার সময়ে সুপর্ণা বারবার ফিরে দেখছিল। আর আমার কেমন যেন একটা লাগছিলো, একবার মনে হচ্ছিলো ওকে ডেকে বলি – তুমি আমায় একটু টাইম দাও, তোমায় বুঝতে চাই আবার মনে হচ্ছিলো ধুসস আমি তো কোনদিন ওর কথা মাথাতেই আনিনি তাহলে আজ কেন উল্টোপাল্টা ভাবছি? সেদিন আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা, মজা করা হয়নি আমার, আমি বাড়ী ফিরে এসেছিলাম। এর পরে কয়েকবার সুপর্ণাদের বাড়ী গেছি, দেখেছি ও মুখ ভার করে তাকিয়ে আছে। কিন্তু আমি কিছুই বলতে পারি নি, পরে শুনেছিলাম ওর নাকি অনেক ছোট বয়সে বিয়ে হয়ে গেছিলো। আমিও পরে প্রেমে আঘাত পেয়ে উপলব্ধি করেছিলাম না চাইতে যারে পাওয়া যায় হয়ত তাঁর প্রেমই খাঁটি। কিন্তু ততদিনে আমার সেই ছোট্টবেলার প্রেম আমার কালো মেম আমার থেকে অনেক দূরে কারো ঘরণী হয়ে সুখে হয়তো ঘর সংসার করছে। আমি আর তাঁর সংসারে দেবদাস হয়ে ঝামেলা বাড়াতে চাইনি, মনে মনে ভেবেছি ‘প্রেম একবারই এসেছিল নিরবে, আমারই এ দুয়ার প্রান্তে। সে তো হায় মৃদু পায় এসেছিল পারি নি তো জানতে।‘ 

এর পরে সরস্বতী পূজা হয়েছিল প্রতি বছর নিয়ম মেনে, তবে আমার স্মৃতিতে তেমন কোন উল্লেখযোগ্য ঘটনা নেই। হয়ত ফোঁটার অপেক্ষায় থাকা সেই প্রেমটি সারাজীবন সেভাবে আফোঁটাই থেকে গেলো। কেউ কখনো জানবেও না, শূন্য এই বুকে আজও অপেক্ষায় থাকব, মাঝে থেকে যাবে কিছু স্মৃতি যা কোনদিনও ভোলার নয়। 

কিন্তু যে সময় আমি কাটিয়ে এসেছি বন্ধুদের সাথে, সে সমস্ত দিনের গল্প করার সময় আমার চোখে মুখে নিশ্চয়ই আলো ফুটে উঠে। আমি আজও বিশ্বাস করি আমাদের মধ্যে প্রেম ছিল, কিন্তু কোন শঠতা ছিলনা, চরিত্রে নির্মলতা ছিলো, কোন কলুষতা ছিলোনা, আচরণে স্থিরতা ছিলো, কোন রকম অধৈর্য্যতা বা অস্থিরতা ছিলনা, অভিমান ছিল কিনতু আক্রোশ, প্রতিহিংসা ছিলনা। তখন মোবাইল ফোন ছিলনা আর কম্পিউটারও ছিলনা, এটুকুই যা তফাৎ আজকের সাথে। তাহলে কি প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে মানুষের আচরণ পাল্টে যাচ্ছে, মনে হয় যাচ্ছে, তাই কালির দোয়াতে খাগের কলম ডুবিয়ে লিখতেন রবীন্দ্রনাথ, তাই তিনি হয়েছিলেন বিশ্বকবি, প্রযুক্তির উন্নয়নের সাথে সাথে আমাদের খাগের কলমের বদলে ‘ফাউন্টেন পেন’, তারপরে এলো ‘বলপেন’, জেল পেন এরও পরে এলো কম্পিউটার, ল্যাপটপ আর ট্যাব, ফ্যাবলেট কত কিছু। এখন তো আর আমাদের পেন না হলেও চলে, আমরা ল্যাপ্টপ, আইপ্যাড, কত সব আধুনিক সব গ্যাজেট ব্যাবহার করি। 

যুগের উন্নতির সাথে সাথে হয়তো হারিয়ে যাচ্ছে কত কিছু, বাঙালির নিজস্ব ভ্যালেন্টাইন দিন সরস্বতী পুজাও হয়তো একদিন এই ভাবেই হারিয়ে যাবে। সভ্যতার, আধুনিকতার বলি হবে এই মিষ্টি দিনটি, সব ভাললাগা, সম্পর্কও। 

তবে একটা কথার উল্লেখ না করলে নয়, এই সরস্বতী পূজার সাথে অঙ্গাঙ্গী ভাবে জড়িয়ে আছে গ্রাম বাংলার আর একটি সাবেক প্রথা। হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন, আমি অরন্ধন বা শীতলষষ্ঠীর কথাই বলছি। সরস্বতীপুজোর পরদিন গোটাষষ্ঠী বা শীতল ষষ্ঠী পালন করা হয়। শ্রীপঞ্চমী তিথি থাকতে থাকতেই গোটা সেদ্ধ রেঁধে রাখতে হয়। গোটা মুগডাল (সবুজ মুগকলাই), গোটা শিম, গোটা মটরশুঁটি, গোটা রাঙা আলু, গোটা আলু, গোটা বেগুণ জোড়া সংখ্যায় দিয়ে (আমাদের বাড়িতে ১২টা করে দেওয়া হয়) গোটা সেদ্ধ হয়। সেদ্ধ হয়ে গেলে কাঁচা সরষের তেল আর লঙ্কা, নুন দিয়ে মেখে খাওয়া হয়। সাথে পান্তাভাত আর সজনেফুল দিয়ে কুলের তক, আর পাঁচ রকম ভাজা, যেমন সিম, রাঙ্গালু, বেগুন, আলুভাজা, পালং শাঁক ভাজা। সরস্বতীপুজোর পরদিন আমাদের দুপুরের খাবারে আর অন্য কিছু খাওয়া চলে না, সবকিছু বাসি রান্না খাওয়ার রীতি আজও মেনে চলা হয়।  

কোথাও কোথাও শিলনোড়া হলুদ ছোপানো কাপড় পরিয়ে ঠান্ডা হলুদ জলে রাখা থাকে। শিলের কোলে থাকে তার নোড়াটি আর মাথায় জোড়া শিম ও জোড়া কড়াইশুঁটি। বহুবছর ধরে বাংলার এই রীতি মেনে আসছেন মায়েরা তাদের সন্তানের মঙ্গলার্থে, যা এর পরে আর দেখা যাবে কিনা কে জানে? আজকালকার আধুনিকা মায়েরা তো তাঁদের সন্তানের মঙ্গলার্থে কেএফসি, ডমিনজ, পিজ্জাহাটের রাস্তা চিনবেন কিন্তু হ্যাপা পুড়িয়ে গোটাষষ্ঠী বা শীতল ষষ্ঠী পালন করবেন না নিশ্চয়ই। 

No comments:

Post a Comment