Friday 15 April 2016

গরম দেখে তুই করিস না ভয়, আড়ালে তার ঠাণ্ডা হাঁসে!




আজকাল ট্রেনে বাসে বাঙালীর এক কথা – উফ কি গরম পড়ল দাদা, প্রান যে যায়? কিংবা ঘেমে চান করে যাচ্ছি রে ভাই। সত্যি বাঙ্গালী বড় উন্নাসিক আর বেইমান, নইলে সেই কবে গ্রিক ঠাকুর প্রমিথিউস একটু আগুন চুরি করে এনেছিল এই আমাদের মতো হতভাগা মানুষ গুলোর জন্নে সেটা কেউ বুজলে না গো?

ওরে হতভাগা, গরম না হলে কি এই ভোটের দুর্দিনে বিরোধী পক্ষ কে ঠাণ্ডা করা যায়? একপক্ষ গরম হলে তবে তো অপর পক্ষ ঠাণ্ডা হবে। বিশ্বাস হচ্ছে না বুজি? হবে নাই তো? আমরা যে বাঙ্গালী, ওকে এক কাজ করুণ দাদা – বাড়িতে এয়ারকন্ডিশনারের পিছনে বা ফ্রিজের পিছনে একটু হাত ছুঁইয়ে দেখুন হাতে নাতে প্রমান পেয়ে যাবেন। এই যে উন্নত দেশ গুলো যাদের আমাদের মতন তৃতীয় বিশ্বের দেশে গরম কিভাবে কমবে সেই নিয়ে চিন্তায় ঘুম হয়না (অথচও তেজস্ক্রিয় বজ্য, ইলেকত্রনিক বজ্য ফেলার জন্নে গরিব তৃতীয় বিশ্বের খোঁজ করে বেড়ায়) তারাও কত্ত গরম গরম বাগবিতণ্ডায় মশগুল – এইভাবে উষ্ণায়ন বেড়ে চললে বরফ গলে যে কত দেশ জলের তলায় চলে যাবে সেই ভেবে কেঁদে কুল পান না তাবর বড় বড় পরিবেশবিদ রা। আচ্ছা ভাবুন তো একবার এই আমরা মানে উন্নত দেশের উন্নত পাবলিক কত নিউক্লিয়ার অস্ত্র জমিয়ে রেখেছি, মানে এক মেগাটন নিউক্লিয়ার বোমা মানে = কত গরম/ তাপ? কেন জমিয়ে চলেছি এই গরম? মানে এই প্রতিপক্ষ দেশের সাথে সম্পর্ক গরম হলেই দেবো ঠাণ্ডা করে।

আচ্ছা অন্ত্য দেশীয় রাজনীতির কথা বাদ দিন, পাড়ায় ইস্ত্রি করার দোকান দেখেছেন? আরে যেখান থেকে আমার আপনার জন্নে ধোপ দুরুস্ত পাট ভাঙ্গা কাপড় আসে? মানে আমি, আপনি দিয়ে আসি কোঁচকানো কাপড়, আর ইস্ত্রিওলা গরম ইস্ত্রির ডলা দিয়ে কোঁচকানো কাপড় জামা সোজা করে। মানে গরম দিলে সোজা হয় আর কি? কি দাদা গরমের এই উপকারিতা ভেবে দেখেন আগে? আমি, আপনি না ভাবলেও আমাদের সরকার কিন্তু এই ফরমুলাটা ঠিক রপ্ত করে নিয়েছে। বেঁকে যাওয়া পাবলিক আর বিরোধী পক্ষ কে সোজা করতে গরমের জুড়ি মেলা ভার।

অনেকেই বলছে অদুর ভবিষ্যতে এই গরমের জন্নে মানুষ আর বাঁচবেনা। কিন্তু আমিতো দিব্য চোখে (নাকি গাঁজার ঝোঁকে) দেখতে পাচ্ছি এই গরমের জন্নে মনুষ্যকুলের বড়োই উপকার হবে। ফটাফট কয়েকটা ডেমো দিয়ে দি – ফসলের ক্ষেতে ডিরেক্ট খই, মুড়ি, পপকর্ণ পাওয়া যাবে,  মাঠে ঘাটে সেদ্দ আলু পাওয়া যাবে।মানে Man Hour (শ্রম ঘণ্টা) বাঁচবে। মানুষ আরও বেশি রিলাক্স করতে পারবে, মিন্স আরও বেশি সোশ্যাল মিডিয়া তে একটিভ থাকতে পারবে। চায়ের দোকানে আর জলে দুধ গরম থুড়ি জল গরম করতে হবে না ডিরেক্ট চা পাতা আর চিনি মেশালেই চা রেডি। ইট পোড়াতে আর নো গাছ কাটা, ইট বানিয়ে রেখে দিলেই কয়েকদিনে ইট রেডি, মানে নো গ্রিন হাউস এফেক্ট। মিউজিয়ামে পরে থাকা ষ্টীম ইঞ্জিন গুলো জাস্ট একটু ধুয়ে মুছে সাফ সুত্ররো করে নিলেই চলবে, নো কয়লা নো অদার জ্বালানী। মানে কয়লা, খনিজও তেল, নিউক্লিয়ার পাওয়ার, কিসসু লাগবে না, তার মানে কয়লা মাফিয়া, তেল মাফিয়া, এই নিউক্লিয়ার পাওয়ার নিয়ে কোরিয়া, আমেরিকার ঝগড়াও শেষ। বিশ্ব শান্তি এলো বলে (ওঁরে এই আইডিয়ার জন্নে কি নোবেল পাবো না আমি)তারপর এই পরিবেশের চিন্তাও শেষ, দুই মেরুর বরফ গললে কি হবে? সেই নিয়ে নো টেনশন। যে হারে বরফ গলে সাগরে মিশবে তার থেকে বেশি বাস্প হয়ে মহাকাশে বিলীন হয়ে যাবে, উল্টে দুই মেরু প্রদেশে আমাদের বস্তি থুড়ি বসতি গড়ে উঠবে, মানে পপুলেশনের টেম্পো সলিউশন আর কি।




তারপর ধরুন যারা মোটা চর্বি গলানোর জন্নে জিমে গিয়ে, স্লিম বটি কিনে একগাদা টাকা নষ্ট করছেন, তারা এই গরমে অটোমেতিকালি স্লিম হয়ে ঘুরে বেরাবেন। তারপর শীতকালে নিত্য নতুন ফ্যাশনের চিন্তাও থাকবে না, এক গাদা টাকাও খরচা হবে না। এই যে গরম কালে আসে পাশে ঝিঙ্কু মামনিরা (আমার মহিলা বন্ধুরা নিজ গুনে ক্ষমা করে দেবেন প্লীজ) ছোট ছোট জামাকাপড় পরে ঘুরে বেড়ায়, ঝারি মারার সময়ে একবারও ভেবে দেখেছেন ইহা কাহার দান?

তাই বলছি বন্ধুগন গরম গরম করে চেঁচিয়ে লাভ নেই, গরমের সাথে গরম না নিয়ে ভাবুন গরমের ভালো দিক গুলো (যেমন আমি ভেবে কিছু ডেমো দিলাম আর কি)। গরম কে একদম খারাপ চোখে দেখবেন না, একবার ভেবে দেখুন এই পৃথিবীতে গরম ছিল বলেই আমরা মানে মনুষ্যজাতি অন্যদের চেয়ে এগিয়ে যেতে পেরেছি। মানুষ গরম হয়েছে বলেই অন্য প্রাণী দের ঠাণ্ডা করে তবেই না এই পৃথিবীর দখল আমরা রাখতে পেরেছি? আর পাবলিকের মেজাজ গরম হয় বলেই না রাষ্ট্রের এতো সব নিয়ম কানুন, এতো শৃঙ্খলাবোধ? এতো আইন, এতো সংবিধান মেনে চলা? এক শ্রেণির মানুষের গরম ঠেকিয়ে রাখতে আর এক শ্রেণির মানুষের কি অবিরাম প্রাণপাত? অতএব মোদ্দা কথা হল গরমই মানুষ কে তার সভ্যতার চুড়ায় পৌঁছে দিয়েছে। তাই গরম নিয়ে নো টেনশন, সাধে কি কোন এক কবি (নাম টা ভুলে গেছি এই গরমে) বলে গেছে – গরম দেখে তুই করিস না ভয়, আড়ালে তার ঠাণ্ডা হাঁসে!



No comments:

Post a Comment