Friday 4 November 2016

আমরা বাঙালী – পর্ব ১


আমরা বাঙালী – পর্ব ১

ছোটবেলায় যখন বাজার করতে যেতাম তখন একটু ভয়ে ভয়ে থাকতাম, পাছে ভোলা ঢুশো মেরে সাইকেল সমেত ফেলে না দেয়। আসলে ভোলার তোলা না পেলে মেজাজ বিগড়ে থাকতো, আসেপাশে যাকেই দেখতে পেতো ঢুশোতে ইচ্ছে হতো তার। ও হ্যাঁ বলতে ভুলে গেছি ভোলা আদতে একটি নধরকান্তি হৃষ্টপুষ্ট কেলে ষাঁড়। যার বীরত্ব ছিল ঢুশো মারাতে, এবিষয়ে ভোলা মনে হয় পিএইচডি করেছিলো। তবে ভোলা ছিল পিওর বাঙালী ষাঁড় (ধর্মের ষাঁড় বললেও অত্যুক্তি হবে না), বেঁছে বেঁছে দুর্বল মনুষ্যগুলিকে টার্গেট করতো। আর কোনও টার্গেট ভূতলশায়ী হলে তার ব্যাগের কলাটা মুলোটা উদরস্ত করতে দেরি করতো না, কাজ মিটলে অন্য টার্গেট। ভোলার থিওরি ছিল খুব ক্লিয়ার হাম্বা বলে একটি ডাক - দিলে দাও, নইলে আমার ঢুশো তো আছেই। এই জন্যে বাজারের সবজিওয়ালারা মানে মানে আলু, পটল, মুলো যে যা পারতো দিয়ে দিতো। ভোলার পেট ঠাণ্ডা থাকলে মেজাজ ফুরফুরে, তখন সে বান্ধবীদের আই মিন অন্য গরুদের পিছনে খানিক কেষ্ট লীলা করে শনি মন্দির লাগোয়া চাতালে শুয়ে ভোঁসভসিয়ে ঘুমাত। নো জাগতিক চিন্তা নো টেনশন।

আজকের বাঙালী যুব সমাজ অনেকটা ভোলার মতো, সুপ্ত আঁতেল, স্বপ্নবিলাসী, ভাববাদী, হচ্ছে-হবে ও স্বভাব বিপ্লবী, সুখী, অলস ও পেটুক মানসিকতার। এঁরা অসম্ভব কালচার সচেতন, বুকুনি ঝাড়ায় এক্সপার্ট। কি করতে হবে এই বিষয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিপ্লব তুলে ফেলছে, কিন্তু বাস্তবে কাজের কাজ কিছুই করছে না, কাঁকড়ার সাথে আজও অদ্ভুত মিল, এখনও লেঙ্গিতে এগিয়ে।

বিশ্বাস করুন ট্রেনে, বাসে, অফিসে, পাড়ায় চায়ের দোকানে, সেলুনে, লাইব্রেরীতে যেখানে যাচ্ছি এই বাঙালী পিছু ছাড়ছে না। দেখে শুনে হেজে গেছি ভাই, তবে কি মুক্তির উপায় নাই? মনে পড়ে গেলো অনেকদিন আগে পড়া পুরন্দর ভাট নামক এক অজেয় কবির অজেয় উক্তি –

“উড়িতেছে ডাঁস, উড়িতেছে বোলতা, উড়িতেছে ভীমরুল,
নিতম্বদেশ আঢাকা দেখিলে ফুটাইবে তারা হুল।
মহাকাশ হতে গু-খেকো শকুন হাগিতেছে তব গায়
বাঙালি শুধুই খচ্চর নয়, তদুপরি অসহায়।“

No comments:

Post a Comment