Wednesday 9 November 2016

হায়রে রেখেছ বাঙালী করে মানুষ (ভাগ্যিস নামানুষ করেনি, খামোকা অবলা জীবগুলি ছোট হতো) করো নি!


হায়রে রেখেছ বাঙালী করে মানুষ (ভাগ্যিস নামানুষ করেনি, খামোকা অবলা জীবগুলি ছোট হতো) করো নি!

সোশ্যাল মিডিয়ায় বাঙালী যত গর্জায়, বাস্তবের মাটিতে তার কিয়দংশ বর্ষালে ভারত কবে জগতসভায় শ্রেষ্ঠ আসন পেয়ে যেত। ইউ এস, কি রাশিয়ার মুখাপেক্ষী হতে হতো না। সকাল থেকে সেই এক ক্যাঁচর ক্যাঁচর – সরকার এবার আর্থিক জরুরী অবস্থা জারি করল। দেশ ও দেশবাসী রসাতলে গেলো! কেউ পোস্ট করছে অভয়ারণ্যে প্রমোদ ভ্রমণের টিকিট কাটতে পারেনি ৫০০ টাকা থাকার জন্যে, কেউ আবার শপিং মলে শপিং করতে পারছে না শুদুই ১০০০ টাকায় পার্স ভরতি থাকায়। আবার কয়েকজনের কাছে শুনলাম ওষুধের দোকানে কনডমের প্যাকেট কিনতে পারল না পকেটে ৫০০ টাকা থাকার জন্যে। কেউ কেউ তো এই ভেবে ব্লাড প্রেশার হাই করে ফেললো – গরীবগুরব লোকগুলো দোকানপাতি, বাজারহাট করবে কিভাবে? তাঁদের উদ্দেশে বলি – ভারতের দিন আনি দিন খাই লোকগুলি আপনার মতো পকেট ভরতি ৫০০, ১০০০ এর নোট নিয়ে ঘোরে না। নিজের ক্ষুদ্র দুনিয়া থেকে বেরোতে পারলে বুঝতে পারতেন, আপনার অসুবিধাটুকু নেহাতই কোলাটোর‍্যাল ড্যামেজ। রাস্তা, ব্রিজ সারাই করতে গেলেও তো দু-একদিনের জন্যে সেই রাস্তা, ব্রিজ বন্ধ করতে হয়, তখনও আপনারা গজগজ করতে ছাড়েন না? আপনি আগামী কয়েকদিন কিভাবে শপিং মলে শপিং করবেন বা রেস্তোরাঁতে কিভাবে বিল মেটাবেন সেটা রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নরের না ভাবলেও চলবে, কিন্তু যারা ফলস সিলিঙের নীচে, কোমোডের সিস্তেনে টাকার তোড়া জমিয়ে রেখেছে, তাঁদের মৌরুসিপাট্টা ভাঙ্গাটা আশু প্রয়োজন। সুবিধাবাদী, পালটিবাজ বুদ্ধিজীবী সমাজ এটা বোধহয় ভুলে গেছেন যে ভারতবর্ষে হত দরিদ্র মানুষের সংখ্যাই বেশি এটা যেমন চরম সত্য, তেমনি এটাও ভয়ঙ্কর আতঙ্কের দেশের ১০ শতাংশ ধনী লোকের কাছেই আছে কালো টাকা, আর সুযোগ মতো সেই কালো টাকাই খাটে ভোটের বাজারে, গয়নার বাজারে, সিনেমায়, ধর্মের নামে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টির কাজে, জঙ্গি আন্দোলনের নামে দেশের সংহতি বিনষ্টের চেষ্টায় আরও কত জায়গায়? আর হঠাৎ এই ধাক্কায় জাল টাকার বাজারেও যে জোর ধাক্কা লেগেছে সেটা কি বুঝতে পারছি আমরা? তাই সাবাশ বলতে দ্বিধা কোথায়?

No comments:

Post a Comment