নীলকণ্ঠের ডায়রি - ২৩ই জানুয়ারী, ২০১৬
উফফ যতই বালিশ মাথাই চেপে
ঘুমানোর চেষ্টা করি না কেন, ঠিক কানের মাথা খেয়ে ফেলার উপক্রম হল দেখছি। সকাল থেকে
একী প্রহসন শুরু হল কে জানে – চারিদিকে ব্যান্ড পার্টির আওয়াজ, দেশভক্তিমূলক গানের
টুকরো কলি ভেসে আসছে “মুক্তির মন্দির সোপান তলে কত প্রাণ হলো বলিদান, লেখা আছে অশ্রুজলে “ কোথাও বা আবার “চল্ রে চল্ সবে ভারত সন্তান, মাতৃভূমি করে আহ্বান৷
বীর দর্পে পৌরুষ গর্বে, সাধ্ রে সাধ্ সবে দেশের কল্যাণ৷”
উরিবাবা হল কি বাঙ্গালী জাতি টার? শেষে চেগে উঠল নাকি? কোনমতে হাত বাড়িয়ে চশমা পড়ে
জানালার দিকে তাকাতে গিয়ে ক্যালেন্ডার এর পাতায় চোখ আটকে গেলো। ও হরি আজ যে ২৩ই
জানুয়ারী, দেশভক্ত, আঁতেল বাঙ্গালীর দেশভক্তি জাহির করার দিন। আমি নাহয় বাবা মাতাল
দাতাল মানুষ, মান আরে হুশ দুটোই খুইয়েছি। কিন্তু ৩৬৪ দিন কথায় কথায় নিজেকে Global জাহির করা বাঙ্গালীর কি আপ্রাণ চেষ্টা
আজ খাটি দেশপ্রেমিক হয়ে ওঠার?
আমার কাজের মাসী, থুড়ি
পুঁটির মা এসে থকাস করে চায়ের কাপ নাবিয়ে বলল চললাম বাপু মুখে ধুয়ে খেয়ে নিয়ো,
মিনমিন করে বললাম ততক্ষণে যে ঠাণ্ডা হয়ে যাবে মাসী? বাপরে বাপ পুঁটির মা চিল্লে
উঠে বলল – রাতে ছাইভস্ম না খেয়ে সকাল সকাল উঠলেই তো পারো, আমি আর পারবনা। আজ ওই
কিলাব এ লজেন্স, বিস্কুট দেবে, পতাকা তুলবে, এমএলএ সাহেব আসবে, ও বাপু আমি চল্লাম।
অগত্যা ঘুমানোর মায়া
ত্যাগ করে বাথরুম থেকে ফ্রেশ হয়ে এসে প্রায় সরবত হয়ে যাওয়া চায়ের কাপে চুমুক দিতে
দিতে কোথায় যেন হারিয়ে গেলাম।
আজ কততম জন্মবার্ষিকী যেন
নেতাজীর? হ্যাঁ ১১৯ তম মনেহয়, অঙ্কে তো চিরকাল কাঁচা আমি তাই নিজের জীবনের অঙ্ক
পযন্ত মেলাতে পারি নি। ধুসস ভাবছি নেতাজীর কথা আর আসছে এই মাতাল দাতাল নীলকণ্ঠের
কথা। আজ ও যেন চোখ বুজলে দেখতে পাই রাতের অন্ধকার চিরে একটা কালো এম্বাসাদর দুরন্ত
বেগে এগিয়ে চলেছে – হাওড়া, বালি, উত্তরপাড়া, চন্দননগর, ব্যান্ডেল, শক্তিগড়,
বর্ধমান, আসানসোল বরাকর ব্রিজ। চালকের মুখ ইস্পাত কঠিন, আর ভিতরের আরোহী শান্ত
সমাহিত, ভবিষ্যৎ কর্মজীবনের উজ্জ্বল স্বপ্ন নিয়ে মশগুল। গন্তব্য গোমো স্টেশন এর পরের
কাহিনী তো রোমাঞ্চকর ডিটেকটিভ উপন্যাস কেও হার মানাবে। সেইসব কাহিনী ব্যক্ত করার
সময় আব জায়গা কোনটাই এটা নয়। আমি শুদু ভাবি এত বড় মহাপ্রান মানুষটার কথা দেশের লোক
এত সহজে কিভাবে ভুলে গেল? কেন মানুষ বিশ্বাস করে নেবে তাইহকুর বিমান দুর্ঘটনার
কাহিনী, কেন বিশ্বাস করে নেবে জনৈক অনিতা পাফ (বাসু?)র কথা, কেন রেনকোজি মন্দিরের
চিতাভস্য কে নেতাজীর বলে পূজা করতে হবে? শাহনমাজ কমিশন (১৯৫৬), খোসলা কমিশন (১৯৭০)
আর সর্বশেষে মুখার্জি কমিশন (১৯৯৯ -২০০৫)এই সব কমিশন গড়ে প্রহসন বন্ধ হক। কবে শেষ
হবে এই ভাঁড়ামোর? ২৩এ জানুয়ারী এলেই পাঞ্জাবি পাজামা পরে ধোপদুরস্ত হয়ে পাড়ার
মোড়ে দাড়িয়ে গরম গরম কিছু ভাষণ আর নেতাজীর
মহৎ বলিদান কে স্মরণ করে, লজেন্স, বিস্কুট বিলিয়ে বাড়ি তে এসে মুরগির ঝোল খেয়ে
দিবা নিদ্রা দিতে দিতে ভাবব ইসস আজ বেশ নির্ভেজাল ছুটির দিন টা শেষ হল এর পর
নেক্সট ছুটির দিন যেন কবে?? আর অফিসে গিয়ে কলার উঁচিয়ে বলে বেড়াব গতকাল একটা
সোশ্যাল ওয়ার্ক করলাম বুজলি, আর আত্মপ্রসাদ লাভ করব? কমসে কম আমরা কি পারি না সেই দাবি
টি তুলতে যে – আমরা নেতাজীর সব কথা জানতে চাই, জানতে চাই –
১) কেন স্বাধীন ভারতে (In a
confidential memo dated February 11, 1949, under the signature of Major General
P N Khandoori, India government) এই নির্দেশ দিতে
হয়েছিলো কোন গভর্নমেন্ট প্রতিষ্ঠানে,
ক্যান্টিনে, সেনা ব্যারাকে, অফিসে নেতাজীর ছবি রাখা যাবে না। নেতাজীর ভুতের ভয়ে?
কোন জবাব আছে তদানীন্তন নেতা নেত্রী দের?
২) কেন ফিরিয়ে নেওয়া হয়নি
আইএনএ এর সেই আজাদি সৈনিকদের ভারতীয় সেনাবাহিনীতে? এমন কি তাঁদের কোন সরকারী
চাকুরী তেও ঢুকতে দেওয়া হয় নি। কেনইবা পণ্ডিতজী (মহামান্য নেহরুজি) বলেছিলেন – ওরা
পাবলিক ওয়ার্ক করুক, গ্রামে পঞ্চায়তে কাজ করতেও বাধা নেই। তবে রাজনীতি তে কিছুতেই
নয়। আর সেনাবাহিনী তে ফিরিয়ে নেবার প্রশ্নই ওঠে না। পরবর্তী কালে সর্দার বল্লভভাই
প্যাতেল ও স্বীকার করেছেন – হ্যাঁ সুভাষ বোসের আইএনএ এর কোন লোক যাতে সরকারী
চাকুরীতে ঢুকতে না পারে সে সম্বন্ধে আমি খুবই সতর্ক ছিলাম। আর আমার আরও লক্ষ ছিল,
ওরা যেন কোনমতেই রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মাথা তুলতে না পারে। কেন এই অমুলক ভঁয়? কিসের
জন্নে এই সাবধানতা? (যদি কোন পাঠক এর সন্দেহ হয় তিনি Shailesh Dey এর আমি সুভাষ বলছি পড়ে নিতে
পারেন)।
৩) নেতাজীর সাথে সেই সময়
মালয় ও বার্মাবাসীর দেওয়া বিপুল ধনরত্ন ছিল, তার কি হল। শোনা যায় রাষ্ট্রপতি ভবনের
জাতীয় সংগ্রহশালায় তার কিছু রক্ষিত আছে, আর বাকি বিপুল ধনরত্ন কোন নেপো মেরে দিলো?
যা আইএনএ এর জাতীয় সম্পত্তি ছিল রাতারাতি কিভাবে ভাগ বাটোয়ারা হয়ে গেলো কিছু লোভী
নেকড়ে দের মধ্যে, এর কোন জবাব আছে স্বাধীন ভারত সরকারের কাছে?
৪) নেতাজী আন্দামান এবং
নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের নাম রেখেছিলেন স্বরাজ দ্বীপ আর শহিদ দ্বীপ, অথচও আজ ও ইন্ডিয়া
গভর্নমেন্ট পুরানো নামই বয়ে চলেছে, কেন নেতাজীর প্রতি সন্মান দেখানোর জন্নে না?
৫) সেটা ১৯৫১ সাল। জেনেভায় অ্যাম্বাসাডরদের সম্মেলন চলছে। ভারতের রাষ্ট্রদূত তখন রাধাকৃষ্ণণ। তাঁর দোভাষী হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন সত্যনারায়ণ সিনহা। তাঁর অভিযোগ, সম্মেলনের ফাঁকে নেতাজির কথা রাধাকৃষ্ণণকে জানানোর পর, রাধাকৃষ্ণণ তাঁকে নাকি সাবধান করে দেন। বলেন, এ বিষয়ে আর তদন্ত করার প্রয়োজন নেই। আর এক পা এগোলে তিনি নিজেই তাঁর ক্যারিয়ারের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবেন। সত্যনারায়ণ সিনহা এই সব কথা খোসলা কমিশনকে জানিয়েছেন। আরও বলেন, তাঁকে সুযোগ দেওয়া হলে, তিনি নাকি প্রমাণ করে দিতে পারেন যে নেতাজি সে সময় রাশিয়ায় ছিলেন (মানে ১৯৪৬-এর পর থেকে ১৯৫০-৫১ সাল পর্যন্ত)। এমন কী তিনি অভিযোগ করেন, সরকার বোধহয় চায় না নেতাজির বিষয়টি জনতার সামনে আসুক।এছাড়াও নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুকে সাইবেরিয়ার কারাগারেই শেষ বারের মতো দেখা গিয়েছিল। এমনই দাবি করেছেন, মস্কোর রামকৃষ্ণ মিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত মহারাজ, স্বামী জ্যোতিরূপানন্দ (রথীন মহারাজ)। শুধু রাধাকৃষ্ণণই নন, নেতাজির সঙ্গে মস্কোয় সাক্ষাৎ করেছেন, রাশিয়ার নিযুক্ত ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রদূত বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিতও (যিনি সম্পর্কে
জওহরলাল নেহরুর বোন) দেশে ফিরে বিজয়লক্ষ্মী পণ্ডিত একটি মিটিংয়ে নাকি বলেছিলেন, তাঁর কাছে এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য আছে, যা প্রকাশ্যে আনলে, গোটা দেশে শক লাগার মতো অবস্থা হবে। ঠিক সেসময়ই তাকে বলতে না দিয়ে, তাঁর শাড়ি ধরে টেনে বসিয়ে দিয়েছিলেন নেহরু, কিন্তু কেন? আমরা
কি কোনোদিনও উপরিউক্ত প্রশ্নগুলির জবাব পাবনা?
৬) আমরা আজ জানতে পারলাম
না নেহরুজীর শেষ অন্তস্তি ক্রিয়ার সময়
এ উপস্তিত রহস্যময় ব্যক্তিটি কি নেতাজী?
৭) ষাটের দশকের শুরুতে,তখন কুচবিহারের ফালাকাটা এলাকার শোলমারিতে সারদানন্দ নামে এক সন্ন্যাসী স্থানীয় ডাক্তারের পৃষ্ঠপোষকতায় এক আশ্রম খুলেছিলেন৷ কী করে যেন রটে গেল তিনি নেতাজি,
সারদানন্দই যে নেতাজি,এই দাবি তুলে নেতাজির একদা ঘনিষ্ঠ বেঙ্গল ভলান্টিয়ার্স-এর মেজর সত্য গুন্ত প্রধানমন্ত্রীকে টেলিগ্রাম করেন৷ শুধু কলকাতা কেন,সারা দেশ থেকে মানুষের ঢল নামে শোলমারিতে৷ মানুষ
জানল না সত্য কি? আবার উত্তরপ্রদেশের ফৈজাবাদে এক জন সুদর্শন, দীর্ঘদেহী বর্ষীয়ান সাধু বাস শুরু করেন৷ তিনি কারওর সঙ্গে দেখা করতেন না,কথা বলতেন পর্দার আড়াল থেকে৷ কদাচিত্ বাইরে বেরলেও কাপড়ে মুখ ঢাকা৷ কেউ নাম জানতে চাইলে শুধু বলতেন তিনি বহু দিন মৃত,মানবসমাজ থেকে নাম কাটা গেছে,তাই তাঁর কোনও নাম নেই৷ তিনি নিজেকে বলতেন মহাকাল, মহাভূত বা মৃতভূত৷ ভক্তরা বলত ভগবানজি৷ সাধারণের কাছে তিনি গুমনামি বাবা ।
কিন্ত্ত বাবার কঠোর গোপনীয়তা বলয় ভেদ করে কয়েক জন বাঙালি বিপ্লবী ও স্বাধীনতাসংগ্রামী তাঁকে নেতাজি বলে সনাক্ত করেছিলেন৷ এঁদের মধ্যে ছিলেন নেতাজির ঘনিষ্ঠ অনুগামী ও শ্রীসঙ্ঘের প্রতিষ্ঠাত্রী লীলা রায়৷ তারা যে প্রমান
পেয়েছিলেন তাতে তারা গুমনামী বাবাকেই নেতাজী বলে সনাক্ত করেছিলেন, অথচও কোন এক
অজ্ঞ্যাত কারনে তারা এটা গোপন রেখেছিলেন। শোনা যায় ফৈজাবাদে "গুমনামি বাবা" ছদ্মনামে নেতাজী 1985 সাল পর্যন্ত অবস্থান করেছিলেন | পরে বেশী জানাজানি হয়ে যাওয়ায় সেখান থেকে অন্তর্ধান করেন | কয়েকজন অতি বিশ্বস্ত ভক্তকে দিয়ে তাঁর মৃত্যু ঘোষণা করা হয় এবং সঙ্গোপনে তথাকথিত দাহকার্য সম্পন্ন করা হয় অতি তৎপরতায় | শুধু তাই নয়, তাঁর উদ্দেশ্যে একটা স্মৃতি স্তম্ভও নির্মিত হয়েছে অত্যন্ত সুপরিকল্পিত ভাবে | এই ব্যাপারে গুমনামী বাবার আশ্রম গৃহের মালিক ও তাঁর ঘনিষ্ঠ ভক্তের বলিষ্ঠ বক্তব্য প্রণিধানযোগ্য
:- আমি স্হির নিশ্চিত যে গুমনামি বাবাই নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস | এ বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই | এখানে আরও বলা হয়েছে ...নেতাজী আজও জীবিত এবং ঠিক সময়মত তিনি আত্মপ্রকাশ করবেন | গুরু বসন্ত সিং আর.টি.ও. (অবসরপ্রাপ্ত) রামভবন " সিভিল লাইন্স, ফৈজাবাদ।
আসলে এটা ব্রহ্মচর্চতে ব্রতী দেশের প্রতি নিবেদিত মহান
দেশনায়কের চরিত্রহননের চেষ্টা নয় কি?ব্রহ্মচর্চার নামে সারাজীবন নারীদের সাথে
দ্বিচারিতা করে গেছেন যারা, লেডি মাউন্ট ব্যাটেনের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতন তথাকথিত
দেশপ্রেমিক নন নেতাজী তাই এই কলঙ্ক কি নেতাজীর প্রাপ্য?
শোনা যায়
প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে ৩৯টি (যার মধ্যে ৪টি টপ সিক্রেট, ২০টি সিক্রেট, ৫টি ক্লাসিফায়েড,
১০ টি আনক্লাসিফায়েড), বিদেশ মন্ত্রকে ২৭ টি, ইন্তেলিজেন্স দপ্তরে ৭৭ টি, এছাড়া স্বরাষ্ট্র
মন্ত্রকে ৬০হাজার পাতার নথি আছে নেতাজি সংক্রান্ত। কিন্তু আমাদের সরকার কি চাইবে?
অস্বস্তিকর, পক্ষপাতদোষে ভরা কোন ফাইল করতে? কিজানি মনে তো হয়না সেরকম কিছু ঘটবে।
আমরা বিরাট কিছু
চাই না, শুধু
জানতে চাই, সত্যিই
কি ভারতমাতার শ্রেষ্ঠ সন্তান নেতাজী কি বিমান দুর্ঘটনায় মারা গিয়েছিলেন? না ক্ষমতালোভী
প্রতিক্রিয়াশীল নোংরা রাজনীতির শিকার হয়েছিলেন তিনি? কোনটা সত্যি বন্ধুগন? তাহলে তৎকালীন নথিপত্র কেউ দেখতে চাইলেই
দেশের সরকার, নেতৃবৃন্দ কেন বারবার একই ভাঙা রেকর্ড চালিয়ে বলে: ‘এই
নথি প্রকাশিত হলে একাধিক বন্ধু রাষ্ট্রের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের অবনতি ঘটবে’, বাঃ কি চমৎকার
বন্ধুকৃত্য? ভারতমায়ের সবচেয়ে দামাল যে ছেলেটি
তথাকথিত বন্ধুদের
ষড়যন্ত্রে ঘরে ফিরে এল না, ক্ষমতালোভী নেকড়েদের শিকার হল, এখনও তারা বন্ধু! ধিক রাজনীতির
ব্যাবসায়ি দের, তোমাদের জয় হো।
দেশ আজ বড় দুঃসময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, চারিদিকে শুদু নেই
আর নেই, এই নৈরাজ্যের মাঝে, এত সাম্প্রদায়িক হানাহানির মাঝে, এত বিভেদের মাঝে শুদু
একজনের কথাই বারে বারে মনে পড়ে তিনি আমাদের প্রানপ্রিয় নেতাজী (আজকাল তো আবার
নেতাজি এই শব্দ তাও উচ্চারণ করতে লজ্জা হয়, স্বাধীন ভারতে নেতাজীর উপাধি পেয়ে বসে
আছেন কোন এক ভ্রষ্ট রাজনৈতিক সুবিধাবাদী লোক)। কোথায় তার গড়ে তোলা আজাদ হিন্দ ফৌজে
তো কোন বিভেদ ছিল না হিন্দু- মুসলমানে বা হিন্দু – খ্রিস্টানে? সবাই তার ডাকে
কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে লড়াই করেছে তাহলে আজ এই বিভেদ কেন? আসলে নেতাজী পরবর্তী নেতৃত্ব
সেই বিশ্বাসযোগ্যতাই প্রমান করতে পারেনি আপামর ভারতবাসীর কাছে, যার বিষময় ফল এই
দেশভাগ আর দেশভাগ পরবর্তী দাঙ্গা। তাই তো হৃদয়মথিত করে একটাই আকুতি ফিরে এসো
নেতাজী আজ তোমাকেই বড় প্রয়োজন আমাদের।
শেষে গঙ্গাজলে গঙ্গাপূজা করি বিখ্যাত কথাশিল্পী শরতচন্দ্র
চট্টোপাধ্যাইয়ের সেই কালজয়ী কথা দিয়ে - “তুমি দেশের জন্য সমস্ত দিয়াছ, তাই ত দেশের খেয়াতরী তোমাকে বহিতে পারে না, সাঁতার দিয়া তোমাকে পদ্মা পার হইতে হয়; তাই ত দেশের রাজপথ তোমার কাছে রুদ্ধ, দুর্গম পাহাড়–পর্বত তোমাকে ডিঙাইয়া চলিতে হয়;—কোন্ বিস্মৃত অতীতে তোমারই জন্য ত প্রথম শৃঙ্খল রচিত হইয়াছিল, কারাগার ত শুধু তোমাকে মনে করিয়াই প্রথম নির্মিত হইয়াছিল,—সেই ত তোমার গৌরব! তোমাকে অবহেলা করিবে সাধ্য কার! এই যে অগণিত প্রহরী, এই যে বিপুল সৈন্যভার, সে ত কেবল তোমারই জন্য! দুঃখের দুঃসহ গুরুভার বহিতে তুমি পারো বলিয়াই ত ভগবান এত বড় বোঝা তোমারই স্কন্ধে অর্পণ করিয়াছেন! মুক্তিপথের অগ্রদূত! পরাধীন দেশের হে রাজবিদ্রোহী! তোমাকে শতকোটী নমস্কার!”
যে সব তথ্য সমুহের সাহায্য নিয়েছি ঃ-
এছাড়া Shailesh Dey এর আমি সুভাষ বলছি, নারায়ন সান্যালের লেখা নেতাজী রহস্য সন্ধানে এবং
বিভিন্ন সমসাময়িক পত্র পত্রিকা আর সর্বোপরি গুগল এর সাহায্য নিয়েছি আমি
আপনার লেখাটি অনেক ভালো লাগলো...
ReplyDelete