Thursday 20 October 2016

ভারতীয়দের থুড়ি বাঙ্গালীর শোকের আয়ু ঠিক কত?




ভারতীয়দের থুড়ি বাঙ্গালীর শোকের আয়ু ঠিক কত?

বেশ কিছুদিন আগে কোন এক লেখায় পড়েছিলাম –

“বিংশ শতাব্দীতে
মানুষের শোকের আয়ু
বড় জোর এক বছর।”
তুমি একবিংশতে নেই
তাই পারোনি দেখে যেতে,
একবিংশ শতাব্দীতে
মানুষের শোকের আয়ু
বড় জোর এক দিন কি দুই দিন।
শিশির জমতে শুরু করার সময়ে
শোক এখন বাষ্প হয়ে উবে যায়,
সুর্য্য ডোবার সময়কাল পর্যন্ত
মানুষ আর অপেক্ষা করেনা
প্রহসনের কোরাসে মিশে যেতে।
লাশগুলো নিমেষে পঁচে যায়,
ভাগ্যবান দুই – একজন
মায়াকান্নার সাগরে ভেসে যেতে যেতে
বিক্রয়যোগ্য মমি হয়ে উঠেন!!”

এই কিছুদিন আগে পর্যন্ত উরি হামলায় নিহত জওয়ানদের জন্যে চোখের জল ধরে রাখতে পারছিল না দেশপ্রেমিক বাঙ্গালীরা, সোশ্যাল মিডিয়াকেই ব্যাটেলফিল্ড বানিয়ে পাকিস্থানের মুণ্ডু পাত চলছিলো তীব্র গতিতে, কোন পথে পাকিস্থানকে দিতে হবে উপযুক্ত জবাব, সে বিষয়ে মোদীজী কিংবা দোভাল সাহেব কে পরামর্শ দিতে পিছপা নই আমরা, আজ একি ছন্দপতন? উরি হামলা, সারজিক্যাল স্ট্রাইক এর পর সিন্ধু দিয়ে কত জল তো গড়িয়ে গেলো, আরও কতবার ক্ষতবিক্ষত হল কাশ্মীর, কিন্তু বীর বাঙ্গালীদের কোন পোস্ট তো চোখে পড়ল না? অবশ্য সংস্কৃতিমনস্ক, উদার মানুষ আমরা, অসব হামলাতামলা তো কাশ্মীরে হয়েই থাকে, এর জন্য শারদউৎসবে যাতে ঘাটতি না থাকে তার জন্যে দেদার সেলফি তুলেছি আর পোস্ট করেছি।  না আমি উৎসব, আনন্দ এসবের বিরোধিতা করছিনা, আমার আপত্তি লোক দেখানো দেশপ্রেমে, আধুনিকটায়। সত্যিই তো আমরা দোষী, এর আগেও তো কতবার রক্তাক্ত হয়েছে দেশ, কেউ না কেউ হারিয়েছে তাঁদের স্বজনকে, কিন্তু কিছুদিন বাদে আমরা আবার সব ভুলে চক্রী, মদতদাতা, খুনিদের হয়ে গলা ফাটিয়েছি, ধুয়ো তুলেছি তথাকথিত মানবতা, নৈতিক দায়িত্ব আরও কত কিছুর? কিন্তু কাজের কাজ কিছুই করি নি, বলা ভালো করার চেষ্টাই করিনি, হয়তো তার জন্যেই পড়শি দেশে আমাদের ঠিক চিনেছে, আমরা ঘেউ ঘেউ বেশি করি এর থেকে বেশি কিছু করার ক্ষমতা নেই আমাদের। 

No comments:

Post a Comment