Tuesday 1 November 2016

বিপ্লব এসেছে হীরক রাজার দেশে


বিপ্লব এসেছে হীরক রাজার দেশে

‘‘এরা যত বেশি পড়ে, তত বেশি জানে, তত কম মানে!’’, কি পাঠক সত্যজিত রায়ের ‘হীরক রাজার দেশে’ সিনেমাটি মনে পড়ে গেলো তো। গপ্পের হীরক রাজা ছিলেন বড়ই দুষ্ট প্রকৃতির লোক, যেকোন মূল্যে মসনদ টিকিয়ে রাখতে সে ছিল বদ্ধ পরিকর। তিনি জানতেন জ্ঞ্যানলাভ বড় বাজে, প্রজারা তাঁর স্বরূপ জেনে গেলে মসনদটি উল্টে যাবে, তাই তাকে বলতে দেখা যায়, ‘এরা যত বেশি পড়ে, তত বেশি জানে, তত কম মানে’। এ তো গেল চলচ্চিত্রের এক স্বৈরাচারী, অগণতান্ত্রিক রাজার কথা। কিন্তু এ যুগের বাস্তবের রাজারা থুড়ি নেতারা কি হীরক রাজার চেয়ে কোন অংশে কম! না একেবারেই না, তা না হলে কাশ্মীর উপত্যকায় একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগানো কেন হচ্ছে? গত চারমাস ধরে কাশ্মীর উপত্যকায় স্কুল বন্ধ, ২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পুড়ে ছাই। এ কেমন স্বাধীনতার আন্দোলন, বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কর্মসূচি? এতদিন বিভিন্ন বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কর্মসূচিতে মিছিলের সামনে রাখা হচ্ছিলো, শিশু ও কিশোরদের। নিরাপত্তা বাহিনীর দিকে পাথর ছুঁড়তে বাধ্য করা হচ্ছিলো তাঁদের, উদ্দেশ্য একটাই মিডিয়াকে, বহিঃবিশ্বকে দেখানো যে এই সংঘর্ষের শিকার শিশু এবং কিশোররাও, ভারতীয় বাহিনীর কি অমানবিক আর দমনমূলক আচরণ? কি সুন্দর চক্রান্ত্র? একদিকে মগজ ধোলাই করে শিশু ও কিশোরদের বিক্ষোভ, প্রতিবাদ কর্মসূচিতে ঠেলে দাও, অন্যদিকে একের পর এক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আগুন লাগিয়ে শিক্ষার পথই বন্ধ করে দাও। না সাধু উদ্যোগ মানতেই হবে, একটা প্রজন্ম কে শিক্ষাঙ্গনের বাইরে রেখে দিয়ে তাঁদের শিক্ষিত না হতে দিলে ভবিষ্যতে তাঁদের জন্যে কর্ম সংস্থানের বাবস্থা করা কঠিন, কিন্তু হাতে বন্দুক তুলে দেওয়া যাবে অনায়সেই। স্বাধীনতার লড়াইয়ে সিপাহীর যে বড় প্রয়োজন।  

তবে এখন কি প্রতিকার? না, হীরকরাজের শিক্ষামন্ত্রী তো বলেইছিলেন, ‘‘হিতাহিতের বিচার করেন কে? করেন হীরকরাজ’, কাশ্মীরের গণতান্ত্রিক আন্দোলনের নেতারা এই ষড়যন্ত্র বুজতে পারছেন কি?

No comments:

Post a Comment